বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১০:০৮
ইসলাম, রূহানিয়্যাত ও হাওজা—ইসলামী বিপ্লবের স্থায়িত্বের মৌলিক স্তম্ভ

ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার সুপ্রিম কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আয়াতুল্লাহ শাবজিন্দেদার বলেছেন, ইসলাম মুহাম্মদী হলো "হাদুস" (আবির্ভাব) পর্যায়ের ইসলাম, ইসলাম হুসেইনী হলো “বা’কা” (অবস্থানের) পর্যায়ের ইসলাম এবং ইসলাম হাওজাভী হলো “ইস্তেমার” (অব্যাহত রাখার) পর্যায়ের ইসলাম। এ তিনটি মৌলিক স্তম্ভ ছাড়া প্রকৃত ইসলামের সঠিক বোধ ও তার বাস্তব প্রকাশ সম্ভব নয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ শাবজিন্দেদার জাহরুমি, শিরাজে হযরত সাইয়্যেদ আলাউদ্দীন হুসেইন (আ.)-এর পবিত্র হরামে আয়োজিত ফার্স প্রদেশের হাওজায়ে ইলমিয়ার নতুন শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ইসলামী বিপ্লবের জন্ম, টিকে থাকা এবং এর লক্ষ্য পূরণে হাওজা ইলমিয়ার ভূমিকা মৌলিক।

তিনি বলেন, “যদি হাওজায়ে ইলমিয়া না থাকত, তবে ইসলাম পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে বিলীন হয়ে যেত। হাওজাগুলো শুধু ধর্মীয় ঐতিহ্যের রক্ষকই নয়, বরং ইরানের সমকালীন ইতিহাসে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রকৃত চালিকাশক্তি।”

আয়াতুল্লাহ শাবজিন্দেদার ইমাম খোমেনিকে (রহ.) হাওজার এক বরকতময় ফলাফল আখ্যা দিয়ে বলেন, “মহান নেতা (ইরানের রাহবারে মুআজ্জাম) বলেছেন, এই বিপ্লব আসলে দেশের সর্বত্র আলেম ও রূহানিয়্যাতের এক হাজার বছরের সংগ্রামের ফসল। ইমাম খোমেনিও (রহ.) এ কথাই বলা হয়েছিলেন যে, ইসলামী বিপ্লব কয়েক শতাব্দীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল।”

তিনি আরও বলেন, “যদি রূহানিয়্যাত শহর ও গ্রামে উপস্থিত না থাকত, তবে জনগণ ও ইসলামের মধ্যে গভীর সম্পর্ক কখনো প্রতিষ্ঠিত হতো না। ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠা আলেমদের ধারাবাহিক মুজাহাদার ফল, আর আজও এর স্থায়িত্ব ও আদর্শ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হাওজা ইলমিয়ার বড় দায়িত্ব রয়েছে।”

হাওজায়ে ইলমিয়ার সুপ্রিম কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জোর দিয়ে বলেন, “বিপ্লবের লক্ষ্য পূরণ, তার আবির্ভাবের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন। এর জন্য ধৈর্য, মুজাহাদা এবং হাওজার সক্রিয় উপস্থিতি অপরিহার্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাসিরাত (অন্তর্দৃষ্টি), ঐক্য ও নতুনত্বের সঙ্গে মাঠে নামা সময়ের দাবি।”

তিনি শত্রুদের ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “ইসলামের শত্রুরা কখনো ষড়যন্ত্র থেকে হাত গুটায়নি, তবে আল্লাহই বিপ্লবকে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহর সাহায্য সবসময় সঙ্গে ছিল, কিন্তু এ সাহায্য অব্যাহত রাখতে জনগণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবিরাম ও সজাগ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”

আলোচনার শেষে আয়াতুল্লাহ শাবজিন্দেদার রাহবারে মুআজ্জামের “গামে দুব্বমে ইনকিলাব” (বিপ্লবের দ্বিতীয় ধাপ) বিবৃতির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “এটি শুধু একটি ইশতেহার নয়, বরং এক দিকনির্দেশক ম্যানিফেস্টো। এটি প্রজ্ঞাপূর্ণ অভিজ্ঞতার নির্যাস এবং ভবিষ্যতের জন্য আলোকবর্তিকা। হাওজা ইলমিয়ার উচিত এই বিবৃতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন ইসলামী সংস্কৃতির গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha